[নতুন] Netaji Subhas Chandra Bose Biography in Bengali নেতাজির জীবনী

[নতুন] Netaji Subhas Chandra Bose Biography in Bengali নেতাজির জীবনী :

Netaji Subhas Chandra Bose Biography in Bengali

“তোমরা আমাকে রক্ত দাও,

আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।”

উনিশ শতাব্দীর শেষের দিক। পরাধীন ভারত ছিল ব্রিটিশ শাসনের অধীনে। ভারতীয়রা ছিল ব্রিটিশদের দ্বারা লাঞ্ছিত, বঞ্চিত এবং অত্যাচারিত।ঠিক এই সময় ভারতের এক বীর এবং সাহসী সন্তান জন্মগ্রহণ করেন, তিনি হলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।

Netaji Subhas Chandra Bose Biography in Bengali Language

একনজরে সুভাষচন্দ্র বসুর সংক্ষিপ্ত জীবনী

টেলিগ্রাম এ জয়েন করুন
জন্ম ২৩ শে জানুয়ারী, ১৮৯৭
বাবার নাম জানকীনাথবসু
মায়ের নাম প্রভাবতী দেবী
স্ত্রীর নাম এমিলি
মেয়ের নাম অনিতা বসু
মৃত্যু ১৮ ই অগাস্ট, ১৯৪৫ (but not confirmed)
মৃত্যুর কারণ বিমান দুর্ঘটনা (তাইওয়ান)
রাজনৈতিক গুরু চিত্তরঞ্জন দাস
রাজনৈতিক দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, ফরওয়ার্ড ব্লক
সেনাবাহিনী আজাদ হিন্দ ফোর্স
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন স্বামী বিবেকানন্দ, চিত্তরঞ্জন দাস
দেশ ভ্ৰমণ লন্ডন, জার্মানি, রাশিয়া, জাপান, মায়ানমার, তাইপেন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, অন্যান্য
সাক্ষাৎ করেছেন হিটলার, মহাত্মা গান্ধী, যোসেফ স্টালিন, অন্যান্য
নেতাজীর বিখ্যাত উক্তি “Give me blood, I will give you freedom”
“তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।”

সুভাষচন্দ্র বসু ছিলেন প্রকৃত দেশভক্ত। তিনি তার মা-বাবার উপরে দেশকে রেখেছিলেন এবং সম্পূর্ণ জীবন ভারতবর্ষের জন্য উৎসর্গ করেন।ভারতবর্ষের বীর সন্তান নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কথা মনে পড়লেই আমাদের মনে অনেক প্রশ্ন জেগে ওঠে।তার জীবনের কিছু গোপন রহস্য আমাদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা হয়।

কিন্তু আজ আমরা আপনাদের কাছে সমস্ত গোপন রহস্য উন্মোচন করার চেষ্টা করব। যেমন :-

  • নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কিভাবে ভারতবর্ষের মহানায়ক হলেন?
  • নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু এত রহস্যময় কেন?
  • বিমান দুর্ঘটনায় কি সুভাষচন্দ্র বসু সত্যিই মারা গিয়েছিলেন?
  • কেন ব্রিটিশ সরকার Netaji Subhash Chandra Bose এর জন্য ভারতকে স্বাধীন করতে বাধ্য হয়?
  • ভারতের বিভিন্ন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে ব্রিটিশ সরকার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কে সব থেকে বেশি ভয় পেতেন কেন?
  • জার্মানি, রাশিয়া ও জাপানের মতো দেশ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কে সম্মান করতেন কেন?

1947 সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এ্যাটলি।স্বাধীনতার পর প্রথমবার এ্যাটলি অক্টোবর 1956 সালে ভারতে আসেন।সেই সময়ের ভারতের কার্যকরী গভর্নর ছিলেন ফণিভূষণ চক্রবর্তী।ফনীভূষণ চক্রবর্তী এ্যাটলিকে প্রশ্ন করেন – “আপনি যে সমস্ত কারণে ভারত কে স্বাধীন করেন তার মধ্যে মহাত্মা গান্ধীর যোগদান ঠিক কতটা?”এই প্রশ্নে এ্যাটলি ফণীভূষণকে জবাব দেন – “খুবই সামান্য।”সত্য কথা বলতে এ্যাটলির এই উত্তর একদম ঠিক ছিল।

এ্যাটলি এবং পুরো ব্রিটিশ সরকার ভারত বর্ষ স্বাধীন হওয়ার আগে এবং স্বাধীন হওয়ার পরে যেই মানুষটি তাদের কাছে সবচেয়ে বেশি ভয়ের কারণ ছিল তিনি হলেন স্বয়ং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।এ্যাটলি নিজে এই কথাটি স্বীকার করেছিলেন।আসুন জেনে নিই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর রহস্যময় মৃত্যুকে ঘিরে থাকা বিভিন্ন তথ্য।কিন্তু তার আগে আমরা সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী (Netaji Subhas Chandra Bose Biography in Bengali) থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা জেনে নিব।

Subhash Chandra Bose history, Netaji Subhas Chandra Bose life history in bengali, Netaji Subhas Chandra Bose rachana, Subhash Chandra Bose family, Subhas Chandra Bose paragraph in Bengali, Subhas Chandra Bose Education, Netaji rachana in Bengali, Netaji Subhash Chandra Bose Biography in Bengali, Netaji Subhas Chandra Bose Biography in Bengali, Netaji Subhas Chandra Bose Essay in Bengali, Netaji Subhas Chandra Bose Paragraph in Bengali, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু প্রবন্ধ রচনা, Biography of Netaji Subhas Chandra Bose.

Table of Contents

Netaji Subhas Chandra Bose Biography in Bengali

Netaji Subhas Chandra Bose Biography in Bengali
Netaji Subhas Chandra Bose Biography in Bengali

 

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী

Born

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ১৮৯৭ সালের ২৩ শে জানুয়ারি উড়িষ্যার কটক (Cuttak, Odisha) শহরে জন্মগ্রহণ করেন।Date of birth of Netaji Subhas Chandra Bose is 23rd January 1897.

Netaji Subhash Chandra Bose Family

Father and Mother

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাবার নাম জানকীনাথ বোস এবং মায়ের নাম প্রভাবতী দেবী।সুভাষচন্দ্র বসুর বাবা জানকীনাথ কটক শহরের একজন সফল ও বিখ্যাত উকিল ছিলেন, যিনি “রায় বাহাদুর” উপাধি পেয়েছিলেন।

Death

1945 খ্রিস্টাব্দের 18th August নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু একটি প্লেন দুর্ঘটনায় মারা যান।নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু নিয়ে অনেক রহস্য আছে। ধীরে ধীরে আমরা সেই সমস্ত রহস্য উন্মোচিত করব।

Subhash Chandra Bose Jayanti

প্রতি বছর ২৩শে জানুয়ারী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে সুভাষচন্দ্র বসু জয়ন্তী উদযাপন করা হয়।Subhas Chandra Bose Jayanti is celebrated every year on 23rd January on the birth day of Nataji Subhas Chandra Bose.

প্রাথমিক জীবন

সুভাষচন্দ্র বসু উড়িষ্যার কটক শহরে এক বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তার সাত ভাই এবং ছয় বোন ছিল। তিনি ছিলেন তার মা-বাবার নবম সন্তান।সুভাষচন্দ্র বসু ও তার ভাই শরৎচন্দ্র খুবই ঘনিষ্ঠ ছিল।

Education

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় খুব ভালো ছিলেন। তিনি ছিলেন কঠোর পরিশ্রমে এবং সমস্ত শিক্ষক তাকে ভালোবাসতেন. সুভাষচন্দ্র বসু স্কুলের পড়াশোনা কটক থেকে করেন।এরপর পড়াশোনার জন্য তিনি পড়াশোনার জন্য তিনি কলকাতাতে চলে আসেন।কলকাতার Presidency College থেকে তিনি Philosophy তে BA পাশ করেন।

নেতাজি সিভিল সার্ভিস নিয়ে পড়াশোনা করতে চেয়েছিলেন’। কিন্তু ব্রিটিশ শাসনে ভারতীয়দের সিভিল সার্ভিস নিয়ে পড়াশোনা করা খুবই কঠিন ছিল।তার বাবা জানকিনাথ বস তাকে সিভিল সার্ভিস পড়ার জন্য ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে দেন। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় নেতাজি চতুর্থ স্থান অধিকার করেন।কিন্তু তিনি সেই চাকরি কে লাথি মেরে দেশ সেবাই নিজেকে নিয়োজিত করেন।

Swami Vivekananda এবং Subhas Chandra Bose

নেতাজি স্বামী বিবেকানন্দকে নিজের গুরু বলে মনে করতেন। স্বামী বিবেকানন্দের বলে যাওয়া অনেক কথায় তিনি অনুসরণ।

Mahatma Gandhi ও Subhas Chandra Bose এর মধ্যে মতভেদের কারণ

ছোটবেলা থেকেই সুভাষচন্দ্র বসু প্রতিবাদী স্বভাবের ছিলেন। কোন জায়গায় ব্রিটিশদের অত্যাচার দেখলে তাদেরকে তাদেরই ভাষায় জবাব দিতেন।মহাত্মা গান্ধী ও সুভাষচন্দ্র বসু মধ্যে মতভেদের এটাই ছিল প্রধান কারণ।মহাত্মা গান্ধীর আন্দোলন এর প্রধান দুটি অস্ত্র ছিল সত্য এবং অহিংসা। তিনি ভারতবর্ষকে অনিসার দ্বারা স্বাধীন করতে চেয়েছিলেন’।

কিন্তু নেতাজি ছিলেন মহাত্মা গান্ধীর সম্পূর্ণ বিপরীত চরিত্রের লোক।তিনি যে কোন উপায় ভারত কে স্বাধীন করতে চেয়েছিলেন।সুভাষচন্দ্র বসু ছিলেন অনেকটা চাণক্যের মত এবং বিশ্বাস করতেন – “শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু।” এজন্য তিনি জার্মানি এবং জাপানের সাথে হাতমেলান।

তার মনে ছিল ভারতবাসীর জন্য অগাধ ভালোবাসা। তিনি ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য চিন্তিত ছিলেন। যার জন্য ১৯২১ সালে সিভিল সার্ভিস এর মত উচ্চপদে চাকরি কে লাথি মেরে ভারতে ফিরে আসেন।

রাজনৈতিক জীবন

ভারতের ফিরেই তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন এবং রাষ্ট্রীয় কংগ্রেস পার্টিতে যোগদান করেন।প্রথমদিকে নেতাজি কলকাতাতে কংগ্রেসের নেতা ছিলেন।তিনি চিত্তরঞ্জন দাস এর মৃত্যুতে তার কাজ শুরু করেন।

নেতাজি চিত্তরঞ্জন দাস কে তার রাজনৈতিক গুরু মনে করতেন।১৯২২ সালে চিত্তরঞ্জন দাস মতিলাল নেহেরু সাথে কংগ্রেস পার্টি ছেড়ে দেন এবং নিজস্ব পার্টি স্বরাজ পার্টি তৈরি করেন।যখন চিত্তরঞ্জন দাশ তাঁর নিজস্ব পার্টির কর্মীদের নিয়ে রণনীতি তৈরি করছিলেন তখন নেতাজি কলকাতার যুব সমাজের কাছে ভালোবাসা ও বিশ্বাসের পাত্র হয়ে ওঠেন।

নিলাজী যুব সমাজের কাছে নতুন ধরনের চিন্তাধারা নিয়ে আসেন।যার জন্য সেই সময়ের যুবসম্প্রদায় তার প্রতি ঝুঁকে পড়ে এবং তিনি যুবনেতা হয়ে উঠে আছেন।১৯২৮ সালে গুয়াহাটিতে কংগ্রেসের একটি বৈঠক চলাকালীন নতুন এবং পুরনো দল কর্মীদের মধ্যে একটি কথা নিয়ে মতভেদ সৃষ্টি হয়।

যুব সম্প্রদায় কোন নিয়ম মানতে অস্বীকার করে এবং নিজস্ব নিয়মে চলতে আগ্রহ প্রকাশ করে।কিন্তু পুরনো নেতা ব্রিটিশ সরকারের তৈরি নিয়ম মেনে চলার জন্য মত পোষণ করেন।সুভাষচন্দ্র বসু এবং গান্ধীজীর বিচার এবং বিশ্বাস সম্পূর্ণ পৃথক ছিল।

নেতাজি গান্ধীজীর অহিংসা নীতির সাথে একমত পোষণ করতেন না। তার চিন্তাধারা ছিল তরুণ যুবকের মত যিনি প্রয়োজনে হিংসার পথে চলতে আগ্রহী ছিলেন।১৯৩৯ সালে সুভাষ চন্দ্র বসু রাষ্ট্রীয় কংগ্রেসের অধ্যক্ষের পদের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।

তার বিপক্ষে গান্ধীজি সিতারামাইয়া পট্টভিকে মনোনীত করেন, যিনি নেতাজির কাছে নির্বাচনে হেরে যান।গান্ধীজী এই হারকে নিজের হার বলে মনে করেন এবং দুঃখ পান।নেতাজি এই কথাটি জানতে পারা মাত্র অধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দেন।

কংগ্রেস ত্যাগ

চিন্তা এবং বিচারধারা ভিন্ন হওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে নেতাজি ধীরে ধীরে গান্ধী বিরোধী তে পরিণত হচ্ছিলেন।এজন্য তিনি কংগ্রেস ছেড়ে দেন।

কারাগারে বন্দি

১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হচ্ছিল। নেতাজি মনে করেন এটাই সব থেকে উপযুক্ত সময় ইংরেজদের উপর আক্রমণ করে দেশ স্বাধীন করার।এই বিষয়ে সেই সময় যুব সমাজ তার সাথে একমত ছিল এবং তার সাথে একই পথে চলার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে।যার ফলস্বরূপ ব্রিটিশ সরকারের কাছে সুভাষচন্দ্র বসু চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন এবং তারা তাকে কারাগারে বন্দি করেন।

কলকাতায় নজরবন্দি

কারাগারে বন্দি থাকাকালীন দুই সপ্তাহ ধরে অন্নজল গ্রহণ না করার জন্য তার স্বাস্থ্য ধীরে ধীরে খারাপ হতে থাকে।তার এই অবস্থা দেখে দেশের যুবসমাজ উঠতে শুরু করে এবং তার মুক্তির দাবি তোলেন।এজন্য ব্রিটিশ সরকার নেতাজীকে কলকাতার একটি বাড়িতে নজরবন্দী থাকার আদেশ দেন।

ছদ্মবেশে পলায়ন

১৯৪১ সালে নেতাজি তার এক আত্মীয় শিশির এর সাহায্যে সেখান থেকে পালিয়ে যান।সবথেকে প্রথমে তিনি বিহারে যান। তারপর পাকিস্তানের পেশোয়ারে। অতঃপর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমানে রাশিয়া) হয়ে জার্মানি এসে পৌঁছান।

নেতাজির ভাই ছাড়া আর কেউ জানত না তিনি কোথায় গিয়েছেন। গান্ধীজী, নেহেরু এমনকি ইংরেজরাও চিন্তিত ছিল নেতাজির পলায়ন নিয়ে।নেতাজি ছদ্মবেশ ধারণ করতে ওস্তাদ ছিলেন।ভারতবর্ষের বাইরে থেকেও তিনি একটি শক্তিশালী সেনা গঠন করেন, যা আজাদ হিন্দ ফৌজ নামে পরিচিত।কিন্তু কীভাবে তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজ তৈরি করেন?

আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠনের ইতিহাস

নেতাজি আজাদ হিন্দ ফৌজ একদিনে তৈরি করেননি। এর পিছনে ছিল তার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং চেষ্টা। আর ছিল ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার এক অদম্য ইচ্ছা।

Netaji meet with Joseph Stalin

রাশিয়াতে নেতাজি জোসেফ স্ট্যালিন এর সাথে দেখা করেন এবং তাঁকে বলেন – আপনি আমার শত্রুর শত্রু। এজন্য আপনি আমার বন্ধু।স্ট্যালিন নেতাজি কে জার্মানির মুদ্রা দেন এবং তাকে জার্মানি পাঠিয়ে দেন।

রাশিয়ার নেতাজিকে সাহায্য করার কারণ

রাশিয়ার নেতাজি কে সাহায্য করার দুইটি কারণ ছিল।প্রথমত, ইউরোপে আমেরিকা এবং রাশিয়া একই দলে থেকে শত্রুপক্ষের সঙ্গে যুদ্ধ করলেও যুদ্ধের শেষে বিপরীত চিন্তাধারার জন্য খুব শীঘ্রই আমেরিকা এবং রাশিয়া একে অপরের শত্রুতে পরিণত হবে।

এইজন্য স্ট্যালিন সুভাষচন্দ্র বসুর মধ্যস্থতায় জাপানের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করার কথা ভাবছিলেন।দ্বিতীয়ত, মহাত্মা গান্ধীর অহিংসা বাদী নীতি কে হিংসা বাদী জোসেফ স্ট্যালিন মুর্খতা এবং মৃত মনে করতেন।তথাপি স্ট্যালিন জওহরলাল নেহেরুর ঘোর বিরোধী ছিলেন।কিন্তু নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে জোসেফ স্টালিন খুবই শ্রদ্ধা এবং সম্মান করতেন।

Netaji meet with Hitlar

জার্মানিতে এসে নেতাজি হিটলারের সাথে দেখা করেন এবং তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন।হিটলার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে সবরকম সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেন।

আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন

নেতাজি দেশের বাইরে থেকে Azad Hind Force গঠন করা শুরু করেন।ইংরেজদের হয়েছে যে সমস্ত ভারতীয় সৈন্যরা জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় জার্মানির যুদ্ধবন্দী অর্থাৎ prisoners of war হয়েছিল নেতাজি তাদের মুক্ত করেন এবং নিজের আজাদ হিন্দ ফৌজের যুক্ত করেন।

এইভাবে সারা বিশ্বে যত ভারতীয় যুদ্ধবন্দী ছিল নেতাজি তাদের সবাইকে মুক্ত করে নিজের ফৌজে যুক্ত করেন।তার এই পড়ে মোট 55 হাজার সৈন্য ছিল।সেনা তৈরীর পর এবার সময় ছিল মানুষের সামনে আত্মপ্রকাশ করার।

বার্লিনে রেডিও মারফত আত্মপ্রকাশ

বার্লিনে নেতাজি রেডিও স্টেশন এর মাধ্যমে সবার সামনে উপস্থিত হয়ে ঘোষণা করেন – “আমি সুভাষ বলছি, আমি বেঁচে আছি।”এই কথা শোনা মাত্র দেশবাসীর চোখে আনন্দ অশ্রু বইতে শুরু করে।

Netaji Subhash Chandra Bose meet with Japanese Prime Minister Tojo

আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠনের পর এবার সময় ছিল ভারতবর্ষে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার জার্মানির পক্ষে সম্ভব ছিল না।এজন্য সুভাষচন্দ্র বসু ভারত কে স্বাধীন করার জন্য ইংল্যান্ডের জাপানের সাথে হাত মেলান।জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জেনারেল তোজো তাকে সব রকম ভাবে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেন।

16th June 1943 জেনারেল তোজো জাপানি সংসদে ঘোষণা করেন – “ভারতের স্বাধীনতার জন্য আমরা সব রকম ভাবে তাদের সাহায্য করব।”জাপানের পরিকল্পনা ছিল মায়ানমারে পূর্ব দিক থেকে ব্রিটিশদের ওপর আক্রমণ করা এবং আজাদ হিন্দ বাহিনীর সাথে যুক্ত হয়ে ইংরেজদের ভারত থেকে তাড়ানো।

জাপান ও নেতাজির পরিকল্পনা ভেস্তে যায়

1944 সালেই আজাধীন ফৌজ জাপানি সেনা ইংরেজদের ভারত থেকে বিতাড়িত করত।কিন্তু ভাগ্য বিমুখ ছিল।সেই বছর বর্ষা তাড়াতাড়ি আরম্ভ হয় জাপানি সেনা ধীরগতিতে এগোতে থাকে।July 1944: জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন বেশ কয়েকবার হারের সম্মুখীন হয়। যার জন্য জাপান সেই সময় ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করার সিদ্ধান্ত নেন।

এই সময়টা সুভাষচন্দ্র বসুর জন্য খুবই কঠিন ছিল। তাছাড়া আজাদ হিন্দ বাহিনীর কাছে তখন ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মতো পর্যাপ্ত জনবল এবং যুদ্ধাস্ত্র ছিলনা। যার জন্য সমস্ত পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

ব্রম্ভদেশের রঙ্গুন শহরে সুভাষচন্দ্র বসু

সুভাষচন্দ্র বসু তৎকালীন ব্রহ্মদেশের রঙ্গুণ শহরে ফিরে আসেন।24th August 1944: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রঙ্গুণ রেডিও স্টেশন থেকে ঘোষণা করেন ইম্ফল সৈন্য কাজ করতে বিফল হয়েছে।কিন্তু তিনি দেশবাসীকে ইংরেজদের বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে বলেন।

নৌ বিদ্রোহ

সুভাষ চন্দ্র বসুর এই আহ্বানে প্রথমে British Indian Navy এবং পরে British India র সমস্ত Force ইংরেজদের বিরোধিতা শুরু করে।

British Government কর্তৃক ভারতের স্বাধীনতা ঘোষণা

ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ ভারতীয় সৈন্যদের বিরোধিতা এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কর্মকাণ্ডে প্রচণ্ড ভয় পান।ব্রিটিশ সরকার ভাবি জন সংগ্ৰাম (Civil War) এর গন্ধ পান এবং এই জন্য ব্রিটিশ সরকার খুব তাড়াতাড়ি ভারতকে স্বাধীন করার কথা ঘোষণা করেন।

হিটলারের আত্মহত্যা Suicide of Hitler

13th April 1945 সালে হিটলার আত্মহত্যা করেন।

জার্মানির পরাজয় স্বীকার

May 1945: জার্মানির নাজির সৈন্য মিত্র রাষ্ট্রদের কাছে পরাজয় স্বীকার করে।

জাপানের ওপর পরমাণু আক্রমণ

1945 সালে আমেরিকা জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করে। এর ফলে জাপান নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়।ব্রিটেন এবং আমেরিকার সৈন্যদল সিঙ্গাপুর, মালাই, থাইল্যান্ড ও ব্রম্ভদেশের দিকে এগোতে থাকে।জাপানের ওপর পরমাণু আক্রমণ কালীন নেতাজি সিঙ্গাপুরে ছিলেন।

সেখান থেকে এক সপ্তাহ পর 16th August 1945 এ নেতাজি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে পৌঁছান।আজাদ হিন্দ বাহিনীর পক্ষ কেন্দ্র ছিল ব্যাংকক। সেখানে তিনি জাপানের প্রতিনিধি হেচিয়া তেরু হো র সাথে সাক্ষাৎ করেন।হেচিয়া নেতাজি কে বলেন – জাপানের তরফে তার কাছে আজাদ হিন্দ ফৌজ এর জন্য কোন দিশা নির্দেশ নেই।

পরমাণু হামলার পর জাপান একপ্রকার বিধ্বস্ত ছিল।এজন্য নেতাজি আজাদ হিন্দ বাহিনীর পরবর্তী রণনীতি ভাবতে শুরু করেন।আজাদ হিন্দ বাহিনীর ADC কর্নেল হাবিবুর রহমান বলেন – জাপানের সাথে মিটিং এর পর নেতাজি সারারাত ঘুমোতে পারেননি।

বিমান দুর্ঘটনা

17th August 1945: পরদিন সকালে নেতাজি Indian National Army র বিমানে চড়ে ব্যাংকক থেকে রওনা দেন এবং দুপুরে ভিয়েতনামের হো-চি-মিনহা শহরের জনসংখ্যার পোর্টে অবতরণ করেন।

তার সাথে ছিল- এ এস আই আর, কর্নেল প্রীতম সিং, দেবনাথ গুজরাল সিং, রহমান এবং আবির হোসেন।সেখানে আরো একটি প্লেন অবতরণ করে, যেটি ছিল জাপানি লেফটেন্যান্ট ইসোবাকার।সেখানে ইসোবাকা নেতাজি কে INR এর প্লেন ছেড়ে তাদের সাথে যাওয়ার প্রস্তাব দেন।

নেতাজি এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।কিন্তু তার অন্যান্য সঙ্গীরা তাকে একলা ছাড়তে রাজি হয় না।এজন্য সুভাষচন্দ্র বসু জাপানীদের সাথে কথা বলে কর্নেল হাবিবুর রহমান কে নিজের সাথে নিয়ে নেন।

নেতাজি ও রহমান জাপানি যুদ্ধবিমানে ওঠেন। কিছু সময় পর প্লেন রওনা হয়।এখান থেকেই শুরু হয় নেতাজির মৃত্যুর সমস্ত রহস্য।ঠিক সন্ধ্যেবেলায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং হাবিবুর রহমান জাপানিদের বিমানে চড়ে।অন্যান্য সঙ্গীরা তাদের কে বিদায় জানানোর জন্য প্লেন পর্যন্ত তাদেরকে এগিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর প্লেন সেখান থেকে রওনা হয়।

বলা হয় যে হোচিমিনহা হা শহর থেকে বেরোনো সেই প্লেন নেতাজীকে নিয়ে সন্ধ্যে সাতটাই ভিয়েতনামের একটি শহর তুরান এ অবতরণ করে।সেখানে রাত কাটিয়ে পরদিন সকালে সেই প্লেন রওনা হয়। ঠিক দুপুর দুটোর সময় তাইওয়ানের তাইপিন শহরে অবতরণ করে।তাইপিন এ তারা সকালের খাবার খায়। এরপর প্লেন সেখান থেকে ওর জন্য রানওয়েতে চড়ে।

প্লেন ওড়া শুরু করা মাত্রই একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। জাপানি প্লেন KI21 এর left engine আলাদা হয়ে যায়। মাটি থেকে উচ্চতা খুব একটা বেশি ছিল না – ৩০ থেকে ৩৫ মিটার হবে। ১০৫০০ কেজি ওজনের প্লেন মাটিতে আছাড় খায়।

জাপানি লেফটেন্যান্ট জেনারেল সেই মুহুর্তেই প্রাণ হারান।কিছু মানুষ দুর্ঘটনাগ্রস্ত প্রেন থেকে বেরিয়ে আসেন।কর্নেল হাবিবুর রহমানের এক পা জখম হয়ে যায়।প্লেনের ইঞ্জিন অয়েল গোটা প্লেন এমনকি নেতাজীর সিট পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। ইঞ্জিন অয়েল এ আগুন লেগে যায় এবং নেতাজির শরীরেও আগুন ধরে যায়।

কর্নেল হাবিবুর রহমান নেতাজীকে প্লেন থেকে বাইরে আসার জন্য বলেন এবং তারা দুজনে একসাথে প্রেন থেকে বেরিয়ে আসেন।10-15 মিনিটের মধ্যে এয়ারপোর্টের বাচাও দল সেখানে ছুটে আসে। আহত এবং মৃতদের কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

নেতাজির মৃত্যু

হসপিটালের জাপানি ডাক্তার তেনা এস হে সুভাষচন্দ্র বসু কে বাঁচানোর চেষ্টা করেন।কিন্তু সারা শরীরে আগুন লেগে যাওয়ার জন্য ভারতের বীর সন্তান সুভাষচন্দ্র বসু হাসপাতালেই প্রাণ ত্যাগ করেন।এখন আপনি যে সমস্ত ঘটনা পড়বেন তার সত্যতা আজও এক জটিল রহস্য।

পরের দিন 19th August 1945: কর্নাল হাবিবুর রহমানের স্বাস্থ্য একটু ভালো হলে তিনি বলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর শরীরকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হোক।জাপানিদের কাছে সেই সময়ে দ্বিতীয় কোন বিমান ছিলনা এবং এই জন্য তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে।

কিছুক্ষণ পর সেখানে বিভিন্ন মিডিয়ায এবং ফটোগ্রাফার এসে উপস্থিত হয়। তারা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ছবি তোলার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন।নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যুর প্রমাণ হিসাবে ছবি তোলা আবশ্যক ছিল।

কিন্তু কর্নেল হাবিবুর রহমান পরিষ্কার তাদের ছবি তুলতে নিষেধ করে দেন।তিনি বলেন “পুড়ে যাওয়া দেহের ছবি তুলতে দেওয়া যাবে না। এই বিষয়টি শবদেহের গরিমার বিষয়।“রাত্রিবেলায় দাহ সংস্কার করা হয়। কর্নেল হাবিবুর রহমান সারারাত সেখানে বসে ছিলেন।পরেরদিন কর্নেল হাবিবুর রহমান শ্মশানে যান এবং সুভাষচন্দ্র বসুর অস্থি অস্থিকুঞ্জে রাখেন।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু রহস্য – Death Mystry of Subhas Chandra Bose in Bengali

এতক্ষণ পর্যন্ত আপনারা Subhas Chandra Bose Biography সম্পর্কে যা পড়লেন তা খুবই স্পষ্ট এবং বিমানে চড়ার আগে পর্যন্ত নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সাথে সঙ্গীরা তার সঙ্গেই ছিল।

সতর্কতা (Disclaimer): এরপর আপনি যা যা পড়বেন তা আমার গবেষণা সাপেক্ষ। এর পরের সমস্ত তথ্য আমি বিভিন্ন বই ঘেঁটে এবং ইন্টারনেট থেকে জোগাড় করেছি।

বিমান দুর্ঘটনার পর এক জাপানি গোয়েন্দা ভিয়েতনামে আজাদ হিন্দ বাহিনীর দুইজন যোদ্ধার সঙ্গে দেখা করেন। সেই দুইজন যোদ্ধা ছিল কর্নেল প্রীতম সিং এবং দেবনাথ।জাপানি গোয়েন্দা বাহিনীর দুজন থাকে বলেন – সুভাষচন্দ্র বসুর প্লেনে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে এবং সুভাষচন্দ্র বসু মারা গিয়েছে এই কথাটি সত্য নয়।

জাপানি গোয়েন্দার কথা শুনে কর্নেল প্রীতম সিং এবং দেবনাথ চমকে যান।এখান থেকেই শুরু হয় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু রহস্য

Netaji Subhas Chandra Bose Biography and Death Mystry

সবথেকে দুঃখের বিষয় এই যে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বেঁচে আছে না মারা গিয়েছে এই সত্যতা যাচাই শুধুমাত্র বাংলা তথা ভারতবর্ষেই হচ্ছিল না, হচ্ছিল ইংল্যান্ডেও।আমেরিকার শিকাগো তে Triven নিউজ পেপার এর সাংবাদিক Alfred Veg পন্ডিত জহরলাল নেহেরু কে তার প্রেস কনফারেন্সের মাঝখানে থামিয়ে বলেন যে তিনি নেতাজীকে ভিয়েতনামে নিজের চোখে দেখেছেন।

দিল্লির ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো দ্বারা নেতাজির মৃত্যুর সত্যতা যাচাই এর চেষ্টা

দিল্লির ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো এবিষয়টির সত্যতা নিয়ে যাচাই শুরু করে।কর্নেল হাবিবুর রহমানের কথা অনুসারে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু টোকিও যেতেন এবং সেখান থেকে ফিরে এসে নেতাজি ইংরেজদের কাছে আত্মসমর্পণ করতেন।কিন্তু রহমানের এর কথার কোন সত্যতা ছিল না। রহমান শেখানো কিছু কথা তোতা পাখির মত বলছিলেন।

কারণ ইংরেজদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হলে নেতাজি টোকিও তে কেন যাবেন। তিনি সরাসরি দিল্লি আসতে পারতেন।কিন্তু নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ইংরেজদের কাছে আত্মসমর্পণ এবং নতি স্বীকার করবেন এই কথাটি স্বীকার করা সম্ভব নয়।ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো টোকিওতে গিয়ে সমস্ত তথ্য যাচাই করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা কিছুই প্রমাণ করতে পারে না।

ব্রিটিশ সরকার এবং আমেরিকার তদন্ত

ব্রিটিশ সরকার সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু সংবাদ নিয়ে সমস্ত সন্দেহ দূর করে একটি সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে চাইছিলেন। কারণ তারা জানত সুভাষচন্দ্র বসু ভারতবর্ষে ফিরে আসলে আবার সারাদেশে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠবে।

ইংরেজ সরকার জানত নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু যদি ভারতের ফিরে আসে তবে ভারত সেভাবে স্বাধীন হবে না যেভাবে তারা করতে চাই, ভারত স্বাধীন হবে নেতাজির মতে।ব্রিটিশ সরকার এই সত্যতা যাচাই করার জন্য আমেরিকার কাছে সাহায্য চাই। আমেরিকার গোয়েন্দা বিভাগ ব্রিটিশ সরকারকে জানাই যে তাইপেনে সেদিন কোন বিমান দুর্ঘটনায় হয়নি।

এরপর ব্রিটিশ সরকার আজাদিন বাহিনীর মেজর জেনারেল জে কে ভোঁসলে কে গ্রেফতার করেন। ভোঁসলে এর উপর অকথ্য অত্যাচার করা হয়।শেষ পর্যন্ত তিনি স্বীকার করেন আজাদিন বাহিনীর সেনানায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু প্রথমে টোকিও এবং সেখান থেকে মাঞ্চুরিয়া যেতেন কারণ রাশিয়ার জোসেফ স্ট্যালিন নেতাজি কে সবরকম সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।নেতাজি রাশিয়াতে আছে এই খবর বিভিন্ন তথ্য এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা MI6 বারবার পাচ্ছিল।  কিন্তু তারা Subhash Chandra Bose এর নাগাল পাচ্ছিল না।

শাহনবাজ কমিশন (1955) ও গোসলা কমিশন (1970)

1955 সালে শাহনবাজ কমিশন এবং 1970 সালে গোসলা কমিশন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্লেন দুর্ঘটনা কে সত্য বলে স্বীকার করে।কিন্তু বার বার এই দুই কমিশনের বিরুদ্ধে আঙ্গুল উঠতে শুরু করে।

মুখার্জি কমিশন (1999)

এজন্য 1999 সালে মুখার্জি কমিশন গঠন করা হয়।মুখার্জি কমিশন তার রিপোর্টে বলে সুভাষচন্দ্র বসু দূরঘটনায় মারা যায়নি এবং সমস্ত তথ্য লুকানো হচ্ছে।প্রথমে দুটি কমিশন সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু রহস্য নিয়ে গভীরভাবে যাচাই করে নি তথা ঘটনাস্থলেও যায়নি।

কিন্তু মুখার্জি কমিশন তাইওয়ান এ গিয়ে সমস্ত তথ্য যাচাই করে। রিপোর্টে মুখার্জি কমিশন বলে 1945 সালে তাইপেনের এয়ারপোর্টে কোন বিমান দুর্ঘটনায় ঘটেনি।

গুমনামী বাবাই কি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ছিলেন?

কয়েক বছর পরে একটি আশ্চর্য ঘটনা ঘটে।নেপাল থেকে ভগবানজি নামক এক সাধু উত্তরপ্রদেশের Luknow এ এসে বসবাস শুরু করেন।সুরেন্দ্র সিং চৌধুরী ছাড়া এই সাধুকে আর কেউ চিনত না।

একদিন এই সাধু একটি চশমার দোকানে নতুন চশমা তৈরি করতে যান। সাধু দোকানে চশমা পড়েন এবং চশমা পড়ে নিজেকে দেখার জন্য তার পাগড়ি সামান্য উপরে ওঠান।দোকানে উপস্থিত একটি লোক তাকে চিনতে পারেন এবং আনন্দে চিৎকার করে ওঠেন “নেতাজি”। দোকানে উপস্থিত অন্যান্য লোকজন সেই লোকটির কথা শুনতে পায় এবং তারা সাষ্টাঙ্গ হয়ে সাধু ভগবানজির পা ছুঁয়ে প্রনাম করে।

সাধু ভগবান জি এবং সুরেন্দ্রনাথ চৌধুরী দোকান থেকে তৎক্ষনাৎ বেরিয়ে পড়েন।এরপর থেকে সেই সাধু গুমনামি বাবা হিসাবে পরিচিত হয়।1966 সালে প্রবিত্র রায় এর সঙ্গে গুমনামী বাবার সাক্ষাৎ হয়।পবিত্র রায় বলেন তিনি যখন গুমনামী বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তখন তিনি দাড়ি বাড়িয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু মুখমণ্ডল দেখে এবং কথা বলার ভঙ্গিতে মনে হচ্ছিল তিনি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।

Handwriting Expert বি লাল এর নিখুঁত পরীক্ষা

গুমনামি বাবাই যে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু তা আরেকজন প্রমাণ করেছিলেন। তিনি হলেন হ্যান্ডরাইটিং এক্সপার্ট B Lal.বি লাল গুমনামি বাবা এবং সুভাষচন্দ্র বসুর ইংরেজি এবং বাংলা হাতের লেখা 4065 টি Photocopy নিখুঁত ভাবে পরীক্ষা করে বলেন – গুমনামি বাবা এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু দুজন একই মানুষ।17th September 1985 ফৈজাবাদে গুমনামি বাবা মারা যান এবং তার মৃত্যুর সাথে সাথে অনেক রহস্য রহস্যই থেকে যায়।

সুভাষ চন্দ্র বসুর বেঁচে থাকার আরো দুটি প্রমান

১৯৪৫ এর পর Netaji Subhas Chandra Bose বেঁচে ছিলেন সে সম্পর্কে আরো দুটি ঘটনা আছে।

ঘটনা ১

অর্ধেন্দু সরকারের ঘটনা

অর্ধেন্দু সরকার নামে এক ইঞ্জিনিয়ার রাশিয়া গিয়েছিল।রাশিয়াতে তিনি এমন কিছু প্রমাণ পান যা থেকে বোঝা যায় 1948 সাল পর্যন্ত Netaji Subhas Chandra Basu রাশিয়াতে ছিলেন এবং তার কয়েক মাস পরে সুভাষচন্দ্র রাশিয়া থেকে ভারত চলে আসে।

এই বিষয়টি জানার সাথে সাথে অর্ধেন্দু সরকার রাশিয়াতে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসে যায় এবং সেখানে তিনি সমস্ত প্রমান সহ সব কথা বলেন।কিন্তু দূতাবাস তরফে অর্ধেন্দু সরকারকে বলা হয় যে তিনি রাশিয়াতে একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে এসেছেন, কোন ভারতীয় গোয়েন্দা হিসেবে নয়।

ঘটনা ২

বিজয় লক্ষী পন্ডিতের ঘটনা

এবার আসি বিজয় লক্ষী পন্ডিত এর কথায়।আপনারা হয়ত জানবেন বিজয় লক্ষী পন্ডিত জহরলাল নেহেরুর বোন এবং রাশিয়াতে তিনি ভারতের প্রথম দূত ছিলেন।বিজয় লক্ষী পন্ডিত যখন রাশিয়াতে তার কার্যকাল শেষ করে ভারতে ফিরে আসার পর একটি জনসভায় বলে ফেলেন, রাশিয়াতে তিনি একজন মহান ব্যক্তিত্বকে দেখেছিলেন যার নাম জনসমক্ষে প্রকাশ হলে 1947 সালের 15 ই আগস্ট ভারতবর্ষে যে পরিমাণ আনন্দ উৎসব উদযাপন করা হয়েছিল তার থেকে আরও বেশি আনন্দের ঢেউ এই দেশে ছড়িয়ে যাবে।

পন্ডিত জহরলাল নেহেরু সেই সময় জনসভায় বিজয় লক্ষী পন্ডিত এর সঙ্গে সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিত সম্পূর্ণ কথাটা শেষ করার আগেই থামিয়ে দেন।

আমাদের শেষ কথা

তাই বন্ধুরা, আমি আশা করি আপনি অবশ্যই একটি Article পছন্দ করেছেন([নতুন] Netaji Subhas Chandra Bose Biography in Bengali নেতাজির জীবনী)। আমি সর্বদা এই কামনা করি যে আপনি সর্বদা সঠিক তথ্য পান। এই পোস্টটি সম্পর্কে আপনার যদি কোনও সন্দেহ থাকে তবে আপনাকে অবশ্যই নীচে মন্তব্য করে আমাদের জানান। শেষ অবধি, যদি আপনি Article পছন্দ করেন (Netaji Subhas Chandra Bose Biography in Bengali নেতাজির জীবনী), তবে অবশ্যই Article টি সমস্ত Social Media Platforms এবং আপনার বন্ধুদের সাথে Share করুন।

Leave a Comment