বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম ২০২২

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম ২০২১ : বিকাশ (Bkash) একাউন্ট ডিলিট বা বাতিল করব কিভাবে? এই বিষয় নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে। কারণ বিকাশ একাউন্ট ব্যাবহারকারী অগনিত। ছোট থেকে বড় প্রায় সবাই বিকাশ এ একাউন্ট করে থাকে টাকা লেনদেন করার জন্য। তাছাড়া প্রায় ক্ষেত্রে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম সম্পর্কে জানার প্রয়োজন হয়।

বিকাশ একাউন্ট খুব জনপ্রিয় একটি লেনদেনের মাধ্যম। তাই প্রতিদিন হাজার হাজর মানুষ বিকাশ একাউন্ট খুলে থাকে। ঘরে বসেই অনেক কিছু  কেনা বেচা করতে পারেন এই বিকাশের মাধ্যমে। তাছাড়া বিদ্যুৎ বিল ও পরিশোধ করা যায় বিকাশের মাধ্যমে। তাই এর জনপ্রিয়তা এবং ব্যাবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে.

বিকাশ একাউন্ট কেন বন্ধ করবো?

অনেক অসাধু মানুষ বিকাশে প্রতারণা করে থাকে। এমনকি অনেকে অনেক সমস্যায় পড়ে থাকে।প্রতারক দের প্রতারণা থেকে বাচঁতে। হ্যাকারদের হাত থেকে বাচঁতে।বিকাশের একাউন্ট এর সিম হারিয়ে গেলে। বিকাশেরএকাউন্ট এর সিম চুরি হয়ে গেলে.

একই পরিবারে অনেকগুলো বিকাশ একাউন্ট থাকলে। অনেকে আবার অন্য মোবাইল ব্যাংক ব্যাবহার করতে চায়, যেমন – নগদ, রকেট, ইত্যাদি। আবার অনেকে চায় পুরাতন বিকাশবন্ধ করে নতুন বিকাশ একাউন্ট খুলতে। এইসব ই বিকাশ বন্ধ করার কারন সমুহ.

তাই চিন্তিত না হয়ে, আজকে আমরা বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব.

বিকাশ (Bikash) একাউন্ট বন্ধ করতে কি কি document লাগে?

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে হলে যে জিনিসগুলি প্রয়োজন হয়, তা হল –

  1. আপনার বিকাশ একাউন্ট যে NID (National ID Card) কার্ড দিয়ে খোলা হয়েছে, ঐ কার্ড নিয়ে বিকাশ এর অফিস এ অবশ্যই যেতে হবে এবং যদি আপনার কোনো পরিবারের কোন সদস্যের যেমন – বাবা, মা, ভাই, বোন এর NID কার্ড ব্যবহার করে থাকেন তাহলে তাকেও অফিসে সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে.
  2. আপনি যদি অন্য কোনো ডকুমেন্ট দিয়ে একাউন্ট খুলে থাকেন তাহলে সেটির প্রয়োজন হবে। যেমন — পাসর্পোড, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি.
  3. বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করার আগে সেই একাউন্টের অর্থের পরিমান শুন্য (০) করে দিতে হবে.
  4. যে সিম কার্ড দিয়ে বিকাশ একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে, সেটি সহ মোবাইল (অতিরিক্ত)

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম ২০২১

টেলিগ্রাম এ জয়েন করুন
বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম

প্রথম ধাপ : — একাউন্ট জমা টাকা শূন্য করা

বিকাশের নিয়ম অনুযায়ী বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার প্রথম শর্ত – হচ্ছে একাউন্টটিতে কোন টাকা রাখা যাবে না অর্থাৎ একাউন্টটির ব্যালেন্স শূন্য বা জিরো (0) করতে হবে.

এখানে অনেকের প্রশ্ন থাকে যে – বিকাশ একাউন্ট এর ব্যালেন্স শুন্য (0) করব কিভাবে? বিকাশ একাউন্টে কোন না কোন পয়সা থেকেই যায়, যেমন – ০.৬৯ বা ২০.৪৫ টাকা.

বিকাশ একাউন্ট ব্যালেন্স শুন্য কিভাবে করবো?

আপনি চাইলে অন্যান্য অনেক ব্যাংক একাউন্টের মত বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স শূন্য (0) করতে পারবেন.

এটি কিভাবে হবে? সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হচ্ছে – আপনার প্রিয়জনের কারোর নম্বরে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া.

যদি আপনি bKash App ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনি ৫০০ টাকা পর্যন্ত ফ্রিতে টাকা পাঠাতে পারবেন, এর জন্য কোনো চার্জ লাগেনা.

কিন্তু *২৪৭# ডায়াল করে টাকা পাঠালে প্রতি বারের জন্য ৫ টাকা চার্জ প্রযোজ্য হবে। তাই টাকা পাঠানোর চার্জ মাথায় রেখে বাকি টাকা প্রিয় জনের নম্বরে পাঠিয়ে দিতে পারেন.

খেয়াল রাখবেন প্রয়োজনে আপনি চাইলে দশমিকের পরের পয়সাগুলোও আপনি পাঠাতে (Send money) পারবেন.

দ্বিতীয় ধাপ : — প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র যাচাই

প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র বলতে আপনার – মূল জাতীয় পরিচয়পত্র/ স্মার্ট কার্ড/ড্রাইভিং লাইসেন্স/পাসপোর্ট এর অনুলিপি। এখানে Online NID প্রিন্ট কপি নিয়ে যেতে হবে.

অবশ্যই মনে রাখবেন বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার জন্য আপনার প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সঠিক থাকতে হবে। কারণ NID কার্ডে কোন সমস্যা থাকলে আপনি আপনার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে পারবেন না.

সুতরাং আপনার National ID কার্ড ঠিক রয়েছে কিনা তা যাচাই করে নিবেন। ঠিক থাকলে আপনি ফাইনাল ধাপের জন্য প্রস্তুত.

তৃতীয় ধাপ : — গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে যোগাযোগ করা

বিকাশ একাউন্ট এ এখন আপনার ব্যালেন্স শূন্য। এরপর যে ব্যক্তির নামে বিকাশ একাউন্টটি খোলা হয়েছিল, তার NID কার্ড এর মূল কপি নিয়ে নিকটবর্তী বিকাশ গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে যেতে হবে.

খেয়াল রাখবেন যার NID কার্ড নিয়ে একাউন্ট খোলা হয়েছিল তাকেও সাথে নিয়ে যেতে হবে। কারন আপনার বিকাশ একাউন্ট তার NID কার্ড দিয়ে খোলা হয়েছে। তাই অবশ্যই NID কার্ডটি যার তাকে নিতে হবে এবং সাথে রেজিস্ট্রেশন মোবাইল নম্বর নিতে হবে.

আপনার সিম কার্ড প্রয়োজন হতে পারে আবার নাও হতে পারে। তবে সাথে করে সিম কার্ডটি নিয়ে যাবেন। আশা করি আপনি কোনো ঝামেলায় পড়বে না। খুব সহজে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে পারবেন.

এবার গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বলুন যে – আপনি আপনার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে চান। তিনি আপনার NID কার্ড থেকে মালিকানা নিশ্চিত করবেন এবং আপনার অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন.

এছাড়া আপনার আর বেশি কিছু করতে হবে না। এই হলো বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার প্রক্রিয়া.

বিকাশ একাউন্টের পিন নম্বর ভুলে গেলে কি করবেন?

বর্তমানে দেশে বিশাল সংখ্যক মানুষ বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে থাকেন। কিন্তু অনেকে বিকাশ একাউন্টের পিন নম্বর ভুলে গিয়ে ভীষণ সমস্যায় পড়ে যান। আবার অনেকে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে চায়। এক্ষেত্রে তার একাউন্টের ব্যালেন্স শুন্য (0) করতে হবে। কিন্তু তার পিন নম্বর মনে নাই। আপনার বিকাশের পিন নম্বর ভুলে গেলে আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স শূন্য (0) করা সম্ভব হবে না। যেহেতু একাউন্টের টাকা খরচ করতে হলে পিন নম্বর লাগবে তাহলে এই অবস্থায় কি করবেন?

অনেকে ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং এর তার কাছে যায় আর অযথা হয়রানির শিকার হন। আপনাদের অযথা চিন্তার কোনো কারন নেই। আপনি এই Article টি পড়ার পর খুব সহজে নতুন পিন নম্বর নিতে পারবেন.

এক্ষেত্রে আমরা আপনাদেরকে একটি ছোট্ট কৌশল বলছি, আপনি অব্যশই তা পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে রাখুন। তাহলে আরো সহজে বুঝতে পারবেন.

আপনি যদি আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন নম্বর ভুলে যান, তবে আপনি প্রথমে আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন নম্বর Reset বা পরিবর্তন করে নিন। এরপর Reset করা পিন নম্বর ব্যবহার করে বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স (০) করে নিন। ঝামেলা মুক্ত খুব সহজে জেনে গেলেন.

বিকাশ একাউন্ট এ নাম পরিবর্তন কিভাবে করবেন?

অনেকে বিকাশ একাউন্টের নাম নিয়ে অনেক ঝামেলায় পড়ে থাকে। তাই নাম পরিবর্তন নিয়ে এদিক ওদিক ছুটাছুটি করে থাকে। আপনার চিন্তিত হওয়ার কোনো কারন নেই। আপনি খুব সহজে বিকাশের নাম পরিবর্তন করতে পারবেন। তাহলে জেনে নিন.

এই সমস্যা টি নিয়ে আপনাকে বিকাশের নিকটবর্তী গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে কল করতে হবে এবং সেখানে আপনাকে জানানো হবে যে, একাউন্টের নাম পরিবর্তন বা মালিকানা পাল্টানোর আগে সেই একাউন্টটি Deactivate বা বন্ধ করতে হবে। তার জন্য উপরের নিয়ম গুলো অনুকরণ করতে হবে এবং অবশ্যই ব্যালেন্স শুন্য (০) করতে হবে.

তারপর সেই অ্যাকাউন্ট পুনরায় যার নামে খুবলেন তার পাসপোর্ট ছবি ও NID কার্ড টির প্রয়োজন পড়বে। তাই আপনারা অফিসে যাওয়ার আগে যার একাউন্ট তাকে ও যার নামে একাউন্ট পরিবর্তন হবে দুজনেই  NID কার্ড সঙ্গে নিয়ে বিকাশ অফিসে ভিসিট করুন। আর হ্যা, মনেকরে যার নামে একাউন্ট পরিবর্তন হবে তার পাসপোর্ট ছবি নিয়ে যেতে ভুলবেন না.

বিকাশ একাউন্টের সর্বশেষ ৬ টি লেনদেনের তথ্য কিভাবে দেখবো?

সর্বশেষ লেনদেনের ৬ টি তথ্য —

অনেকে বিকাশ একাউন্টে টাকা লেনদেন করে থাকে। কেউ কেউ বিকাশে টাকা জমা করে থাকে, আবার কেউ টাকা তুলে থাকে, আবার কেউ কেউ টাকা অন্যকে পাঠায়, এমন কি কেউ রিচার্জ বা কেনাকাটা করে থাকে.

এতে অনেকের ভূলে টাকা অন্য নাম্বারে ও চলে যায়। কেউ বা বলে দোকানদারকে টাকা ক্যাশ আউট করে দিয়েছে। কিন্তু সত্যি কথা বলতে দোকান দার এর কাছে টাকা আসে নাই। হয়তো ভূলে অন্য নাম্বারে চলে গেছে। এতে বিকাশের টাকা লেনদেন নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়ে থাকে.

এক কথায় বলা যায়, মানুষ বলতে ভূল আছে। আবার অনেকের মোবাইলে টাকা চলে এসেছে কিন্ত টাকার ম্যাসেজ আসে নাই। এমনকি অনেকের ম্যাসেজ ভূলে ডিলেট হয়ে গেছে.

অনেকের সর্বশেষ টাকা লেনদেনের কোনো তথ্য খুজে পায় না। অযথা চিন্তার প্রয়োজন নেই। তাহলে শুরু করা যাক কিভাবে সর্বশেষ টাকা লেন দেনর তথ্য বের করা যায়.

  1. প্রথমে আপনি আপনার মোবাইলে *247# নম্বরে ডায়াল করুন এবং তারপর আপনি খালি ঘরে 7 দিয়ে My BKash অপশনে চলে যান.
  2. এরপর 2 দিয়ে Request Statement অপশনে চলে যান.
  3. তারপর খালি ঘরে আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন নম্বর দিয়ে দিন.
  4. তারপর খুব সহজে আপনার টাকা লেনদেনের সর্বশেষ ৬ টি তথ্য পেয়ে যাবেন.

আশা করি আপনি খুব সহজে বুঝতে পারছেন। আমার পোস্টি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকে। তাহলে কমমেন্ড করে জানাবেন.

নিকটবর্তী বিকাশ গ্রাহকসেবা কেন্দ্র কোথায়?

যেকোন ধরনের সহযোগিতা পেতে নিকটবর্তী বিকাশ গ্রাহক সেবার ঠিকানা জানতে বিকাশ Helpline নম্বর 16247 এ কল করুন.

আমাদের শেষ কথা

তাই বন্ধুরা, আমি আশা করি আপনি অবশ্যই একটি Article পছন্দ করেছেন (বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম ২০২১)। আমি সর্বদা এই কামনা করি যে আপনি সর্বদা সঠিক তথ্য পান। এই পোস্টটি সম্পর্কে আপনার যদি কোনও সন্দেহ থাকে তবে আপনাকে অবশ্যই নীচে মন্তব্য করে আমাদের জানান। শেষ অবধি, যদি আপনি Article পছন্দ করেন (বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম), তবে অবশ্যই Article টি সমস্ত Social Media Platforms এবং আপনার বন্ধুদের সাথে Share করুন।

Leave a Comment