গরুর রচনা – Cow Essay in Bengali

গরুর রচনা – Cow Essay in Bengali : আমাদের বেদেও গরুর উল্লেখ পাওয়া যায়। গরু ঈশ্বরের সমান স্থান পেয়েছে। কথিত আছে সব দেব-দেবীর বাস গরুতে। গরু পালনের প্রথা অনেক পুরনো। বাড়িতে গরু থাকলে সেই বাড়ির সমস্ত বাস্তু দোষ আপনা থেকেই দূর হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, ওই বাড়িতে যে ঝামেলা আসে তাও গরু নিজের উপর নিয়ে যায়। এ ধরনের বিশ্বাস প্রচলিত আছে।

গরুর রচনা – Cow Essay in Bengali

টেলিগ্রাম এ জয়েন করুন
গরুর রচনা

গরুর রচনা – 1 (300 শব্দ)

ভূমিকা

ভারতে গরুকে মায়ের মর্যাদা দেওয়া হয়। গরু একটি পোষা প্রাণী। আরও অনেক গৃহপালিত পশু আছে, তবে তার মধ্যে গরুর স্থান সবচেয়ে বেশি। প্রাচীনকাল থেকেই গরু মাকে দেবীর মতো মনে করা হয়। প্রতিটি শুভ কাজে শুধুমাত্র গরুর জিনিস ব্যবহার করা হয়। এমনকি গরুর মলত্যাগকারী পদার্থ (গোবর, মূত্র)ও ব্যবহার করা হয়। যাকে পঞ্চগব্যের (দুধ, দই, ঘি, গোবর, মূত্র) উপমা দেওয়া হয়েছে। এই উপাদানগুলিরও ঔষধি গুণ রয়েছে। অনেক ওষুধ তৈরিতে ঘি ও গোমূত্র ব্যবহার করা হয়।

গরুর গঠন

গরুর শরীরের গঠন দুটি শিং, চারটি পা, দুটি চোখ, দুটি কান, দুটি নাসিকা, চারটি থোকা, একটি মুখ এবং একটি বড় লেজ নিয়ে গঠিত। গরুর খুর তাদের হাঁটতে সাহায্য করে। তাদের খুর জুতা হিসাবে কাজ করে। এবং আঘাত এবং ধাক্কা ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে। সারা বিশ্বে গরুর প্রজাতি পাওয়া যায়। কিছু প্রজাতিতে শিং বাইরের দিকে দেখা যায় না। দুধ উৎপাদনে ভারত বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। গরুর দুধ খুবই উপকারী ও পুষ্টিকর।

উপসংহার

ভারতে অনেক প্রজাতির গরু পাওয়া যায়। প্রধান জাতগুলি হল ‘সাহিওয়াল’ যা পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তর প্রদেশ এবং বিহার অঞ্চলে পাওয়া যায়। দক্ষিণ কাথিয়াওয়ারের ‘গির’, রাজস্থানের যোধপুর, জয়সালমের ও কচ্ছ অঞ্চলে ‘থারপারকার’, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্ণাটকের ‘দেওনি’, রাজস্থানের নাগৌর জেলার ‘নাগৌরি’, সিকিমের পাহাড়ি অঞ্চলে ‘সেরি’ এবং দার্জিলিং।, ‘নিমারি’ মধ্যপ্রদেশে, ‘মেওয়াতি’ প্রজাতি (হরিয়ানা), ‘হাল্লিকার’ প্রজাতি (কর্নাটক), ‘ভাগনারি’ প্রজাতি (পাঞ্জাব), ‘কাঙ্গায়াম’ প্রজাতি (তামিলনাড়ু), ‘মালভি’ প্রজাতি (মধ্যপ্রদেশ) ), ‘গাভলাভ’ প্রজাতি (মধ্যপ্রদেশ), ‘ভেচুর’ প্রজাতি (কেরল), ‘কৃষ্ণবেলি’ প্রজাতি (মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ) পাওয়া যায়।

গরুর রচনা – 2 (400 শব্দ)

ভূমিকা

গরুর দুধ খুবই পুষ্টিকর। এমনকি একটি নবজাতক শিশু, যাকে খাওয়ানো নিষেধ, তাকেও গরুর দুধ দেওয়া হয়। শৈশব থেকে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত সব বয়সের মানুষেরই গরুর দুধ খাওয়া উচিত। এটি আমাদের অনেক রোগের সাথে লড়াই করার শক্তি দেয়। শিশু এবং রোগীদের বিশেষ করে এটি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

ইউটিলিটি

বিজ্ঞানীরাও এর বৈশিষ্ট্যের প্রশংসা করেন। শুধু দুধ নয়, এর দুধ থেকে তৈরি অন্যান্য পণ্য যেমন দই, মাখন, পনির, বাটারমিল্ক, সব দুগ্ধজাত পণ্যই উপকারী। যেখানে পনির খেলে প্রোটিন পাওয়া যায়। অন্যদিকে গরুর ঘি খেলে শক্তি পাওয়া যায়। আয়ুর্বেদে এর গুরুত্ব অনেক। কেউ যদি নিদ্রাহীনতায় ভুগে থাকেন তবে মাত্র দুই ফোঁটা ঘি নাকে দিলে এই রোগ সেরে যায়। এছাড়া রাতে পায়ের তলায় ঘি লাগিয়ে ঘুমালে খুব ভালো ঘুম হয়।

গরুর ঘির ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে। এর সাহায্যে হবন-পূজা ইত্যাদি করা হয়। আর আমাদের ঋষি-ঋষিরা যা-ই করতেন, সবগুলোর পেছনে নিশ্চয়ই বৈজ্ঞানিক কারণ আছে। হবন কুণ্ডে গরুর ঘি ও অক্ষত (চাল) রাখলে আগুনের সংস্পর্শে এলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস নির্গত হয়, যা পরিবেশের জন্য উপকারী। গরুর ঘি তেজস্ক্রিয় গ্যাস শোষণ করার আশ্চর্য ক্ষমতা রাখে। শুধু তাই নয়, হবনের ধোঁয়া বায়ুমণ্ডলকে পবিত্র করে। রুশ বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী, আগুনে এক চামচ গরুর ঘি দিলে প্রায় এক টন অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। এটা বেশ আশ্চর্যজনক।

উপসংহার

গরুকে গ্রামীণ অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমাদের দেশের জন্য গ্রাম যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি গ্রামের জন্য গরুও গুরুত্বপূর্ণ। গত কয়েক বছর ধরে গরুর জীবন বিপন্ন। এর প্রধান কারণ প্লাস্টিক।

শহরগুলিতে, আমরা প্লাস্টিকের সবকিছু পাই। যা আমরা ব্যবহারের পর আবর্জনায় ফেলে দেই। যা নিরীহ গরু চরে খেয়ে, প্রাণ হারায়। আমরা সবাই জানি যে প্লাস্টিক ধ্বংস হয় না, তাই এটিকে বিচক্ষণতার সাথে ব্যবহার করা উচিত। এটি শুধু গরুর জীবনের জন্যই নয়, পরিবেশের জন্যও প্রয়োজনীয়।

গরুর রচনা – 3 (500 শব্দ)

মুখবন্ধ

আমাদের শাস্ত্রে গরুকে মায়ের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। গরুকে পবিত্র মনে করা হয়। তাই, ভারতীয় বাড়িতে, বাড়ির প্রথম রুটি গৌমাতাকে নিবেদন করা হয়। প্রাচীনকালে গ্রামে গরুর সংখ্যা দিয়ে সম্পদ পরিমাপ করা হত।

কথিত আছে, সমুদ্র মন্থনের সময় গরুর উৎপত্তি। এবং স্বর্গে স্থান পেয়েছে। আমাদের পুরাণেও গরুর মহিমা বর্ণিত হয়েছে। পুরাণে উল্লেখ আছে যে সমুদ্র মন্থন থেকে মাতা কামধেনু আবির্ভূত হয়েছিলেন। কামধেনুর নাম দেওয়া হয়েছিল সুরভী। ব্রহ্মাদেব কামধেনুকে তাঁর জগতে নিয়ে গিয়েছিলেন। এবং তারপর তা জনকল্যাণের জন্য ঋষি-ঋষিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

গরুর প্রকার

গরু বিভিন্ন রং ও আকারের হয়। তাদের আকার ছোট, তবে লম্বাও। এর পিঠ প্রশস্ত। আমাদের দেশে যেমন বৈচিত্র্যময় জলবায়ু রয়েছে, তেমনি বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন জাতের প্রাণীও দেখা যায়। গরুও এর ব্যতিক্রম নয়।

1) সাহিওয়াল

এটি ভারতের সেরা প্রজাতি। এটি প্রধানত উত্তর প্রদেশ, বিহার, হরিয়ানা এবং পাঞ্জাব প্রদেশে পাওয়া যায়। এটি দুধ ব্যবসায়ীদের একটি প্রিয়, কারণ এটি বছরে 2000-3000 লিটার পর্যন্ত দুধ দেয়। সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া হলে, এটি যে কোনও জায়গায় বাস করতে পারে।

2) গির

এটি মূলত ভারতের গুজরাটের গির বনাঞ্চলে পাওয়া যায়। তাই এর নাম পড়ে গেছে। এটি ভারতের দুধের গাভী। এটি সাধারণত দিনে 50-80 লিটার দুধ দেয়। এই বিশেষত্বের কারণে বিদেশেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ইজরায়েল এবং ব্রাজিলে এটি বিশেষভাবে পালন করা হয়।

3) লাল সিন্ধি

লাল রঙের কারণে এর নাম লাল সিন্ধি। যেহেতু সিন্ধু প্রদেশ এর আদি স্থান, তবে এখন এটি কর্ণাটক তামিলনাড়ুতেও পাওয়া যায়। এটি বছরে 2000-3000 লিটার পর্যন্ত দুধ দেয়।

4) রাঠি জাত, কাঙ্করেজ, থারপারকার

এটি রাজস্থানের একটি সুপরিচিত জাত। এটি রাথাস উপজাতির নামে নামকরণ করা হয়েছে। এটি প্রতিদিন 6-8 লিটার দুধ দেয়। রাজস্থানের বারমের, সিরোহি এবং জালোরে কাঁকরেজ বেশি পাওয়া যায়। যদিও থারপারকার যোধপুর এবং জয়সলমীরে বেশি দেখা যায়।

5) দাজ্জাল ও ধন্নি প্রজাতি

এই তিনটি প্রজাতিই পাঞ্জাবে পাওয়া যায়। এটি বেশ চটপটে বলে মনে করা হয়। ধনী প্রজাতি বেশি দুধ দেয় না। কিন্তু দাজ্জাল দেয়।

6) মেওয়াতি, হাসি-হিসার

এগুলি হরিয়ানার প্রধান জাত। মেওয়াতী কৃষি কাজে বেশি ব্যবহৃত হয়। যেখানে হাসি-হিসার হরিয়ানার হিসার অঞ্চলে পাওয়া যায়।

উপসংহার

গরুর খাবার খুবই সহজ। এটা বিশুদ্ধ নিরামিষ। এটি সবুজ ঘাস, শস্য, পশুখাদ্য ইত্যাদি খায়। এটি যে কোনো সাধারণ পরিবার সহজেই রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে। গরু সমতলের সবুজ ঘাস চরাতে ভালোবাসে। গরুর দুধ থেকে অনেক খাবার তৈরি করা হয়। গরুর দুধ দই, মাখন, বাটারমিল্ক, পনির, চেন্না এবং মিষ্টি ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এর দুধ খুবই হজমযোগ্য। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, অনেক রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি দেয়।

আমাদের শেষ কথা

তাই বন্ধুরা, আমি আশা করি আপনি অবশ্যই একটি Article পছন্দ করেছেন (ব্যবসায় উদ্যোগ এর ইংরেজি কি?)। আমি সর্বদা এই কামনা করি যে আপনি সর্বদা সঠিক তথ্য পান। এই পোস্টটি সম্পর্কে আপনার যদি কোনও সন্দেহ থাকে তবে আপনাকে অবশ্যই নীচে মন্তব্য করে আমাদের জানান। শেষ অবধি, যদি আপনি Article পছন্দ করেন (গরুর রচনা – Cow Essay in Bengali), তবে অবশ্যই Article টি সমস্ত Social Media Platforms এবং আপনার বন্ধুদের সাথে Share করুন।

Leave a Comment